বাংলাদেশে যেভাবে পালিত হলো এবারের নতুন বছর
বাংলাদেশ জুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক পর্যায়ে যাওয়ায় এবার জনসমাগম এড়িয়ে ভার্চুয়ালি নববর্ষ উদযাপনের নির্দেশনা ছিল সরকারের। একই সঙ্গে বুধবার থেকে রমজান মাস শুরু হয়েছে।
ফলে গত বছরের মত এবারও নববর্ষে রাজধানীতে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ কোনো আয়োজন ছিল না। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলে এবার ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজন প্রচার করা হয়েছে।
আরো দেখুন:
READ MORE
পার্থে বাংলা বর্ষবরণ করলো বাওয়া
খ্রিস্টীয় দিনপঞ্জীর ব্যাপক ব্যবহারে বাংলা নববর্ষে হালখাতার চল অনেকটাই সীমিত হয়ে পড়েছে। তারপরও পুরান ঢাকার অনেক ব্যবসায়ী বৈশাখে হালখাতা খুলতেন, গ্রাহকদের নিয়ে অনুষ্ঠানও করতেন। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারী তা উল্টে দিয়েছে।
গত বছর মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পর হালখাতা খোলার অনুষ্ঠান করতে পারেননি এই ব্যবসায়ীরা। এবারও ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে কঠোর বিধি-নিষেধের কারণে বৈশাখের অনুষ্ঠানসহ সব বন্ধ হওয়ায় হালখাতাও হয় নি।১৯৮৯ সালে 'স্বৈরাচারবিরোধী' ভাবমূর্তি নিয়ে বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে শুরু হয় এই আনন্দ শোভাযাত্রা, যা ১৯৯৬ সালে পরিচিতি পায় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে।
Street Art in Sydney (File Photo) Source: SBS Bangla
সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নানা অনুষঙ্গ মেশানো মঙ্গল শোভাযাত্রা এখন ইউনেস্কোর ‘ইনটেনজিবল হেরিটেজ’ এর অংশ।
গত তিন দশকে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও নিরবচ্ছিন্নভাবে এই আয়োজন হয়েছে মঙ্গল কামনা ও শুভবোধ জাগ্রত করার বার্তায়।
এবার পরিকল্পনা থাকলেও সেই ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়েছে করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধের ফলে। ফলে চৈত্রের শেষ দিকে চারুকলায় বর্ষবরণ প্রস্তুতির যে ব্যস্ততা থাকে, এবার আর তা দেখা যায়নি।
তবে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে ভয় জয়ের আহ্বান জানিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার পোস্টার তুলে ধরছেন আয়োজকরা।
আরো দেখুন:
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে এক বাণীতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বাঙালির জীবনে বাংলা নববর্ষের আবেদন চিরন্তন ও সর্বজনীন। বাঙালির এক আনন্দ-উজ্জ্বল মহামিলনের দিন। আনন্দঘন এ দিনে রাষ্ট্রপতি দেশে-বিদেশে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, অতীতের সব গ্লানি ও বিভেদ ভুলে বাংলা নববর্ষ জাতীয় জীবনে সর্বক্ষেত্রে আমাদের ঐক্যকে আরো সুসংহত করবে। সব অশুভ ও অসুন্দরের ওপর সত্য ও সুন্দরের জয় হোক।
নববর্ষে দেশবাসীকে বৈশাখী শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহামারীকালে সবাইকে বলেছেন সাবধান থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে। সেই সঙ্গে আশ্বস্ত করেছেন এই বলে যে সরকার সবার পাশে রয়েছে।
মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মহামারী মোকাবেলায় দেশবাসীকে সাহস জোগানোর পাশাপাশি সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপ তুলে ধরেন।সরকার যে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে, তা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে মহামারীও নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। সংক্রমণ কমাতে যে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ হয়েছে, জীবন বাঁচাতে তা মেনে চলতে সবার প্রতি অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।
Bangladesh Prime Minister Sheikh Hasina wants people to be cautious about COVID infections during Eid-ul-fitr (File Image). Source: Getty Images
এবার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ডিজিটাল পদ্ধতিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও।
বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনও বাঙালিদের বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘বাংলা নববর্ষ উদযাপন কমুউনিটির জন্য একটি মৌসুমী উৎসবের চেয়েও বেশি কিছু। আপনাদের ঐতিহ্য তুলে ধরতে উৎসবটিকে আপনারা প্রাণবন্ত করে তোলেন সংগীত এবং নৃত্য, আহার এবং ভাষা, পোশাক এবং কৃষ্টির মাধ্যমে।'শুভেচ্ছা বারতায় তিনি আরও বলেন, 'অস্ট্রেলিয়ায় বাঙালি কমিউনিটি বেড়ে চলেছে, সেই সাথে উপহার হিসেবে আপনারা আপনাদের সংস্কৃতির এই আয়োজন বৃহত্তর সমাজের সাথে ভাগ করে নিচ্ছেন।’
Prime Minister Scott Morrison at a press conference at Parliament House in Canberra Source: AAP
শুনুন প্রতি সোমবার এবং আরও খবর দেখতে শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় এবং আমাদের ভিজিট করুন।
আরো দেখুন: