বুধবার বিকাল ৫টায় শেষ হওয়ার কথা ছিল, তার এক ঘণ্টা আগেই শেষ হয়েছে ভারতের অযোধ্যা জমি বিতর্কের শুনানি। ৩৯ দিন টানা শুনানির পর ৪০ তম দিনে শুনানি শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। সেই মতোই বুধবার শুনানি শেষ হয়েছে। তবে বুধবারই রায় জানায় নি সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। কমপক্ষে ২৩ দিন পর রায় শোনানো হবে বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, আগামী ১৭ নভেম্বর অবসর নিচ্ছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্চন গগৈ। রায়দান আপাতত স্থগিত রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ।বুধবার যে এই শুনানি-পর্ব শেষ হতে পারে তা সকালেই জানিয়ে দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। শুনানির জন্য আরও কিছুটা সময় চেয়েছিলেন এই আইনজীবি। তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, “যথেষ্ট হয়েছে। আজ বিকাল পাঁচটায় অযোধ্যা শুনানি শেষ হতেই হবে।”
NEW DELHI, INDIA MARCH 07: Chief Justice of India, Ranjan Gogoi with Judge Arjan Kumar Sikri for his farewell in New Delhi. Source: K Asif/India Today Group/Getty Images
মামলায় নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল হিন্দু মহাসভা। কিন্তু, শীর্ষ আদালত সেই আবেদন নাকচ করে দেয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, মামলার সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষকে আগেই প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ সময়ে বক্তব্য শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অন্যদিকে, অযোধ্যায় আরও কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। অনুমতি ছাড়া ঐ এলাকায় ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়াও, ঐ জেলায় নৌকা চালানো, বাজি তৈরি এবং বিক্রিতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের চিহ্নিত করে দেওয়া এলাকায় দোকান ও গোডাউন খোলা রাখার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ১৪ অক্টোবর থেকে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে ঐ এলাকায়।
মঙ্গলবার দু’পক্ষের আইনজীবিদের মধ্যে বাদানুবাদের সূত্রপাত মহন্ত সুরেশ দাসের আইনজীবি কে পরাশরণের সওয়ালকে কেন্দ্র করে। তিনি বলেন, সম্রাট বাবর ভারত জয়ের পর রামের জন্মস্থানে মসজিদ নির্মাণ করে ঐতিহাসিক ভুল করেছিলেন। এখন ঐ ভুল সংশোধন করা প্রয়োজন। তার বক্তব্যের বিরোধিতা করেন সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের আইনজীবি রাজীব ধবন। তিনি বলেন, এটা নতুন যুক্তি। অন্য মামলাগুলোতেও এই বিষয়টি তারা বলতে পারতেন। এর জবাব দেওয়ার অধিকার আমার রয়েছে। পরাশরণের সহযোগী আইনজীবি সি এস বৈদ্যনাথন আপত্তি জানান যে, বার বার বিরোধী পক্ষ থেকে তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। পরে অবশ্য আদালত জানায়, ধবনকে বক্তব্য পেশের সুযোগ দেওয়া হবে।
পরে সওয়াল করতে উঠে ধবনের সঙ্গে ফের বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন আইনজীবি বৈদ্যনাথন। এক সময় রীতিমতো গলা চড়িয়ে তিনি বলেন, এ সব কী হচ্ছে? কেউ যদি ধারাভাষ্য দিতে থাকেন, তা হলে আমি সওয়াল চালিয়ে যেতে পারবো না। এর পরেই প্রায় চিৎকার করেই বৈদ্যনাথনের উদ্দেশে আইনজীবি ধবন বলেন, আপনি চুপ করুন। আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আইনজীবি বৈদ্যনাথন বলেন, ধবন, আমাকে চুপ করতে বলছেন, এটা কী বলতে পারেন? সে সময় পরিস্থিতি সামাল দেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।