গৃহ-বিবাদের শিকার ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারীদের জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রথম নির্মিত আশ্রমের জন্য সরকারের তহবিল

ব্রিসবেনের সাহারা হাউসের কর্মকর্তারা বলেন সরকারের দেয়া ২০০,০০০ ডলার গ্র্যান্ট তাদের আগামী দুই বছরের জন্য তাদের ধারণ ক্ষমতা দ্বিগুন করতে এবং ঝুঁকিতে থাকা নারীদের তাদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক রীতির মধ্যে থেকে সহায়তা দিতে সাহায্য করবে।

Jatinder Kaur with her team.

Sahara House manager Jatinder Kaur with her team. Source: Supplied

দক্ষিণ এশিয়ার, বিশেষ করে মূলত ভারত থেকে আসা নারীদের জন্য করা প্রথম প্রজেক্টটি তাদের কার্য্যক্রমের জন্য সরকার থেকে তহবিল পেলো। সরকার পারিবারিক এবং দাম্পত্য সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের সাহায্যের জন্য এমন ৪০টি প্রজেক্টকে ৬০ মিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা দিয়েছে। 

এর মধ্যে ব্রিসবেনের সাহারা হাউস পাবে ২০০,০০০ ডলার যার ঘোষণা এসেছে এই সপ্তাহে, গৃহবিবাদ ঠেকাতে এটি সরকারের সেফ প্লেস প্যাকেজের অংশ।  সরকার এজন্য ৩৪০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়েছে।  

সাহারা হাউসের ম্যানেজার জাতিন্দার কাউর এই ফান্ডিংয়ের খবরে 'খুশিতে কেঁদে ফেলেছিলেন' বলে জানান। তারা ২০১৭ সালে এই প্রকল্প শুরু করেন এবং এবারই প্রথম তারা ফেডারেল সরকার থেকে সহায়তা পেলেন। 

এই আশ্রমটি বর্তমানে পাঁচজন নারী এবং শিশুকে আশ্রয় দিয়েছে, এখন তারা আরো একটি তিন বেড-রুমের বাড়ী নির্মাণ করতে পারবেন, এবং তাদের গারাজটি ষ্টুডিও রুমে রূপান্তর করবেন।
The funding boost will allow Sahara House to complete this tiny home.
The funding boost will allow Sahara House to complete this tiny home. Source: Supplied
মিজ কাউর এসবিএস নিউজকে বলেন, "এটা হয়তো অনেকের কাছে ছোট্ট উদ্যোগ মনে হতে পারে কিন্তু আমাদের কাছে অনেক কিছু।" 

"আমরা এখন আমাদের যা সক্ষমতা তা দুগুণ বাড়াতে পারব, তার মানে বিপদে থাকা নারীদের ফিরিয়ে দিতে হবে না।" 

সাহারা হাউস ব্রিসবেনে কয়েকজন সেচ্ছসেবী সমাজকর্মীদের দ্বারা পরিচালিত হয়। এখানে সাধারণত দক্ষিণ এশিয়ান নারীদের সাহায্য করা হয়।

মিজ কাউর বলেন, "আমরা এখানে সাহায্যকামী নারীদের সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে সহায়তা করি, কারণ অনেক নারীরা যারা সাহায্যের জন্য আসেন তারা নতুন এবং অস্থায়ী অভিবাসী।" 

"তাদের অনেকেই ইংরেজি বলতে পারে না, এবং তারা একই সংস্কৃতি থেকে আসা যার ফলে তারা স্বস্তি এবং পরিচিত বোধ করে।" 

মিজ কাউর নিজে মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্ডিয়ান মাইগ্র্যান্টদের মধ্যে পারিবারিক সহিংসতার ওপর পিএইচডি করছেন। 

তিনি বলেন, এই ফান্ডিং তাদের অনেক এগিয়ে নেবে, তবে যেসব নারীরা ঝুঁকিতে আছে তাদের জন্য আরো কিছু করতে হবে।  

 তিনি আশা করেন ফেডারেল সরকার ২০১৯ সালের যৌতুক প্রথা সংক্রান্ত সিনেট ইনকোয়ারির পরামর্শ মেনে 'অস্ট্রেলিয়া ভিসার ঝুঁকিতে থাকা নারীদের' জন্য পদক্ষেপ নেবে, এতে নির্যাতিতরা তাদের ভিসা স্ট্যাটাস নির্বিশেষে অস্থায়ীভাবে সুরক্ষা পাবে। 

তিনি বলেন, "বিপদে থাকা নারীরা যাতে অস্থায়ী সুরক্ষা পায় এমন ব্যবস্থা খুবই জরুরি, বিশেষ করে যখন তারা ট্রমার মধ্যে দিয়ে যায়, তারা কি করবে জানে না, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তখন তারা উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকে।" 

"যেসব অস্থায়ী ভিসাধারী নারীরা পারিবারিক সহিংসতার শিকার তাদেরও সেন্টারলিংক থেকে জরুরী সাহায্য দেয়া প্রয়োজন।" 

ডিপার্টমেন্ট অফ সোশ্যাল সার্ভিসেসের একজন মুখপাত্র গত মাসে পার্লামেন্টারি ইনকোয়ারি কমিটিকে বলেছেন যে কভিড ১৯ প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে তাদের ডোমেস্টিক হেল্পলাইন ১৮০০রেস্পেক্ট-এ সাহায্যের জন্য কল বেড়ে গেছে।

যে ৪০টি প্রজেক্ট SafePlace ফান্ডিং পাচ্ছে তারা প্রতিবছর ৬,০০০ নারী ও শিশুদের সহায়তা দেবে। 

মিনিস্টার ফর ফ্যামিলিস এন্ড সোশ্যাল সার্ভিসেস-এর অ্যান রুষ্টন বলেন, "মরিসন সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ানদের নিরাপদ ও শংকামুক্ত রাখা, কিন্তু দুঃখজনক যে সব বাড়ীতেই নারী ও শিশুরা নিরাপদ নয়।"

"যখন কোন নারী গৃহত্যাগ করতে চায় তখন তাদের নিরাপদ আশ্রয় দেয়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এজন্য সহিংসতার শিকার হাজার হাজার নারী ও শিশুদের জরুরী আবাসন দেয়া প্রয়োজন যাতে তারা নিরাপদে তাদের জীবন নতুন করে গড়তে পারে।"

আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ যদি পারিবারিক সহিংসতার শিকার হন তবে কল করুন 1800RESPECT বা 1800 737 732 এই নাম্বারে অথবা ভিজিট করুন.  তাছাড়া জরুরি প্রয়োজনে কল করুন ০০০  

আরও দেখুনঃ 



Share
Published 1 October 2020 2:19pm
Updated 1 October 2020 2:23pm
By Lin Evlin
Presented by Shahan Alam


Share this with family and friends