নির্ধারিত ১০০ ওভার শেষেও দুই দল সমানে সমান। এমনকি সুপার ওভার শেষেও সমান রান।
সুপার ওভারেও ম্যাচ টাই হওয়ায় শিরোপার নিষ্পত্তি হয়েছে বাউন্ডারি সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে, যেখানে এগিয়ে থেকে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছে ইংল্যান্ড। আর, শিরোপার এতোটা কাছাকাছি গিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পরও বলা যায়, হৃদয় জিতেছে নিউজিল্যান্ড।
বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডের ঘরে গেলেও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে একটি ওভার-থ্রো ও সেই সূত্রে পাওয়া ৪ রান।
ইংল্যান্ডের ইনিংসে জয়ের জন্য শেষ ৩ বলে দরকার ছিল ৯ রান। এমন পরিস্থিতিতে মার্টিন গাপটিলের থ্রো বেনস্টোকসের ব্যাটে লেগে বাউন্ডারি সীমানা অতিক্রম করে যায়। আর ব্যাটসম্যানরা দৌঁড়ে ২ রান নেওয়ায় আম্পায়ার মোট ৬ রান যোগ করতে বলেন স্কোরবোর্ডে। এটা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ট্রেন্ট বোল্টের করা চতুর্থ বলটি ডিপ মিডউইকেটে পাঠিয়ে ২ রান নিতে চেয়েছিলেন বেন স্টোকস। মার্টিন গাপটিল বেশ ভালো থ্রো করেছিলেন।স্টাম্পে সরাসরি লাগলে হয়তো রান-আউট হতে পারত। সে শঙ্কাতেই পড়িমরি করে ডাইভ দিয়েছিলেন স্টোকস। বল তাঁর ব্যাটে লেগে থার্ড ম্যান দিয়ে পার হয় সীমানা। রিপ্লে এবং স্টোকসের ক্ষমা প্রার্থনাসুলভ চাহনি দেখে বোঝা গেছে, এ বাউন্ডারি হওয়ায় তাঁর ইচ্ছাকৃত কোনো হাত ছিল না।নিতান্ত অনিচ্ছাকৃতভাবেই এটা ঘটে গেছে।
মাঠের সহকর্মী আম্পায়ারের সঙ্গে আলোচনা করে স্কোরবোর্ডে ৬ রান (দৌঁড়ে ২ রান ও ওভারথ্রোতে ৪ রান) যোগ করার সিগন্যাল দেন আরেক আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। এতে ম্যাচ ঘুরে যায় ইংল্যান্ডের দিকে।৩ বলে ৯ রান থেকে সমীকরণ নেমে আসে ২ বলে ৩ রানে। তারপর বাকিটা ইতিহাস।
গণমাধ্যম থেকে ক্রিকেট বিশ্লেষকদের সবার প্রশ্ন, ওটা ৬ রান নাকি ৫ রান হবে? আর এ প্রশ্ন তোলার সুযোগ করে দিয়েছে ক্রিকেটেরই ‘ফিল্ডারদের ওভার-থ্রো কিংবা ইচ্ছাকৃত কাজ’ নিয়ে আইনের ১৯.৮ অনুচ্ছেদ। সেখানে বলা হয়েছে, ‘ফিল্ডারের ওভার-থ্রো কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে করা কোনো কিছু থেকে বাউন্ডারি হলে...বাউন্ডারি যোগ হবে এবং ব্যাটসম্যানরা একসঙ্গে যত রান নিয়েছেন সেটাও, যদি থ্রোয়ের সময় তাঁরা ইতিমধ্যেই একে অপরকে পার হয়ে যান।’
আইনের শেষের কথাটি নিয়েই প্যাঁচ লেগেছে। ওই ঘটনার ভিডিও রিপ্লে দেখে পরিষ্কার বোঝা গেছে, গাপটিল থ্রো করার সময় ইংল্যান্ডের দুই ব্যাটসম্যান বেন স্টোকস ও আদিল রশিদ দ্বিতীয় রান নেওয়ার জন্য একে অপরকে ক্রস (পার হওয়া) করেন নি। অর্থাৎ গাপটিল যখন থ্রোয়ের জন্য বল তুলছিলেন, স্টোকস ননস্ট্রাইক প্রান্তে আর আদিল রশিদ স্ট্রাইকারের প্রান্তে ছিলেন।অর্থাৎ দৌড়ে ২ রান নয়, ১ রান হবে আর সঙ্গে বাউন্ডারি—মোট ৫ রান। আইনটির অস্পষ্টতার কারণেই এ প্রশ্ন উঠেছে।কারণ, ফিল্ডারদের থ্রো নিয়ে যেমন পরিষ্কার করে কিছু বলা হয় নি, তেমনি গোটা প্রক্রিয়ায় ব্যাটসম্যানদের ভূমিকা নিয়েও স্পষ্ট করে কিছু বলা হয় নি। গাপটিলের থ্রো কিন্তু উইকেট রক্ষকের বরাবরই ছিল। ব্যাটসম্যানের ব্যাটে লাগার কারণে তা ওভার-থ্রো হয়েছে।
জমজমাট এই ফাইনালে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। নির্ধারিত ওভারে তারা ২৪১ রান করতে সমর্থ্য হয়।
জবাবে প্রথম ১০০ রানের মধ্যেই চার উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় ইংল্যান্ড।
শেষ ওভারে যখন জয়ের জন্য ১৫ রানের প্রয়োজন হয় তখনই ম্যাচে দেখা দেয় তুমুল উত্তেজনা।