গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো:
- অস্ট্রেলিয়ায় এখন নতুন একটি ওয়ার্নিং সিস্টেম এবং ফায়ার ডেঞ্জার রেটিং পদ্ধতি চালু রয়েছে
- কালার কোডেড ফায়ার ডেঞ্জার রেটিং সিস্টেম এবং ওয়ার্নিং সিস্টেমটি একই ধরণের
- অস্ট্রেলিয়ান ফায়ার ডেঞ্জার রেটিং সিস্টেমটি আগুন বা বুশফায়ার কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে তা বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়
- অস্ট্রেলিয়ান ওয়ার্নিং সিস্টেমটি চলমান কোনো বিপর্যয়ের তীব্রতা কতটুকু তা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে অস্ট্রেলিয়া ‘ব্ল্যাক সামারে’ ঘটে যাওয়া বিপর্যয়কর বুশফায়ারের জন্যে সারা বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে চলে এসেছিল।
আগুনের লেলিহান শিখা ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরেই বেশ কয়েকটি অঞ্চল আবার বন্যার পানির নিচে চলে গিয়েছিল। তীব্র বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের কারণে নদীর পানি উপচে ওঠায় এই ঘটনা ঘটে।
রব ওয়েব অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ফায়ার অ্যান্ড এমার্জেন্সি সার্ভিসেস (AFAC) এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্টেট ও টেরিটরির ত্রিশটিরও বেশি জরুরি সাহায্য পরিষেবাগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্রমবর্ধমান হার ও তীব্রতার সময়ে সর্বোচ্চ যোগাযোগ, প্রস্তুতি এবং মোকাবেলা করার স্বার্থে একটি সমন্বিত পদ্ধতি খুঁজে বের করার জন্য একসাথে কাজ করেছে।
Source: AAP
জরুরী পরিষেবা সংস্থাগুলো এবং সাধারণ জনগণ, উভয়েই যেন ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় সতর্ক সংকেতগুলো বুঝতে পারে এবং দেশের যে প্রান্তেই থাকুক না কেন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করার জন্যেই দেশজুড়ে একই রকম সতর্কীকরণ পদ্ধতি চালু করা হলো।
ফায়ার ডেঞ্জার রেটিং এবং জরুরী সতর্কতা পদ্ধতি অনেকটা একই রকম, তবে সেগুলো ঝুঁকি ও বিপদের মাত্রা অনুযায়ী বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যবহৃত হয়।
ফিওনা ডানস্টান, ব্যুরো অফ মেটিওরোলজি বা BOM-এ কর্মরত ন্যাশনাল কমিউনিটি এনগেজমেন্ট ম্যানেজার, এই পার্থক্যগুলি ব্যাখ্যা করেছেন।
তিনি বলেন, অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ান ওয়ার্নিং সিস্টেমটি যে কোনো আপৎকালীন ঘটনার তীব্রতা জানাতে ব্যবহৃত হয়। এবং এটি বিভিন্ন ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য ব্যবহৃত হয়, কেবল বুশফায়ার বা আগুনের জন্য নয়।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশব্যাপী অস্ট্রেলিয়ান ওয়ার্নিং সিস্টেম চালু করা হয় এবং এটি তিনটি কালার-কোডেড ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়।
নতুন সংশোধিত ফায়ার ডেঞ্জার রেটিংস সিস্টেমটি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে চালু করা হয়েছে এবং এতে চারটি অনুরূপ কালার-কোডেড ক্যাটাগরি রয়েছে।
এলিজাবেথ গোহ নিউ সাউথ ওয়েলস রুরাল ফায়ার সার্ভিসে দীর্ঘদিন ধরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, এই সতর্ক সংকেতগুলো বোঝা খুবই জরুরি।
নতুন ফায়ার ডেঞ্জার রেটিং সিস্টেমটি বিভিন্ন জরুরী পরিষেবা সংস্থা এবং আবহাওয়া ব্যুরো কর্তৃক সংগৃহীত সর্বশেষ তথ্য ও উপাত্ত একত্র করে তৈরি করা হয়েছে।
AFAC-র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রব ওয়েব ব্যাখ্যা করে বলেন, নতুন সিস্টেমটি তৈরির সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া নানা ধরণের জলবায়ুর প্রকৃতি এবং গাছপালার প্রকারভেদ বিবেচনা করা হয়েছে।
মি. ওয়েব বলেন যে সবুজ এবং হলুদ রেটিংয়ের সময়, জনসাধারণকে আবহাওয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে সাম্প্রতিক তথ্য জানতে স্থানীয় জরুরি পরিষেবাগুলির সাথে যুক্ত থাকতে উৎসাহিত করা হয়।
রেটিংয়ের সর্বোচ্চ দুটি ক্যাটাগরি হল 'এক্সট্রিম' বা চরম, যার রঙ কমলা, এবং ‘ক্যাটাসট্রফিক’ বা বিপজ্জনক, যা লাল।
মি. ওয়েব ব্যাখ্যা করে বলেন, 'এক্সট্রিম' সংকেতের অর্থ জীবন এবং সম্পদের নিরাপত্তার জন্যে অতিসত্বর পদক্ষেপ নিতে হবে। আর ‘ক্যাটাসট্রফিক’ বা লাল সংকেত মানে বেঁচে থাকতে হলে এই মুহুর্তে বুশফায়ারের ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা ছেড়ে বের হয়ে আসতে হবে।
Strong winds fan Vic bushfires. Source: AAP
যদিও অস্ট্রেলিয়ার বেশ কিছু জনবহুল অঞ্চলে গরমের মাসগুলিতে বুশফায়ার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, তবে দেশের অন্যান্য অংশ, যেমন উত্তরাঞ্চলে শীতকালেও বুশফায়ার হতে পারে।
Natural disasters in Australia Source: AAP
এর প্রথম স্তরটি হল অ্যাডভাইস বা উপদেশমূলক, যার রঙ হলুদ, এবং এর অর্থ বিপর্যয় শুরু হয়েছে, তবে এখনই জীবনের উপরে সরাসরি কোনো হুমকি নেই।
দ্বিতীয় স্তরটি কমলা রঙের এবং এটিকে 'ওয়াচ অ্যান্ড অ্যাক্ট' বলা হয়। এর অর্থ হলো পরিস্থিতি দ্রুতই পরিবর্তিত হচ্ছে এবং নিজেকে রক্ষা করার জন্য এখনই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
Examples of the three-tiered Australian Warning levels.
মিজ ডানস্টান বলেছেন যে প্রতিটি সতর্কতামূলক সংকেতে কার কীরকম প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত সেটিও তখনকার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে।
যেমন, বন্যা বা আগুনের ক্ষেত্রে হয়ত এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়াটাই মঙ্গলজনক হবে। তবে যদি উচ্চ তাপ বা দাবদাহ অথবা প্রচন্ড শিলাবৃষ্টি হয়, সেক্ষেত্রে কোথাও নিরাপদ আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। বিপর্যয়ের সময় কী করা হবে সেটি আগে থেকে ঠিক করে রাখা নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ।
মি. ওয়েব বলেন, প্রত্যেকেরই তাদের স্থানীয় জরুরী পরিষেবাগুলির সাথে যোগাযোগ রাখা উচিৎ যেন তাদের এলাকায় কী ধরণের বিপদ ঘটতে পারে সে সম্পর্কে আগাম তথ্য জানা থাকে।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও লিংকে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: