বার্লির ওপর চীন যে ট্যারিফ আরোপ করেছে তাতে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে, সেখানে এ বছর ইতিমধ্যে অধিকাংশ বার্লি উৎপাদক আবাদ শুরু করে দিয়েছে যাদের সংখ্যা প্রায় ৩,০০০।
গত পাঁচ প্রজন্ম ধরে মিচ মিওলিনির পরিবার নারেম্বীন এলাকার কাছে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার গম উৎপাদন কেন্দ্রে চাষাবাদ করে আসছে।
প্রায় ১৪,০০০ একরের সুবিশাল জায়গা নিয়ে তাদের ফার্ম যেখানে মিঃ মিওলিনি তার ভাই এবং বাবা-মা প্রায় ১৫০০ ভেড়া পালন করেন, এবং লেগুমে, ক্যানোলা, লুপিন, ওট এবং গম চাষ করে আসছেন।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার এই অংশে বার্লির চাষ হয় খুব ভালো। বিগত কয়েক বছরে মিঃ মিওলিনি এবং তার পরিবার বার্লি উৎপাদন তিনগুন বাড়িয়েছে, যা তাদের মোট আয়ের ৪০ ভাগ।
কিন্তু তারা মাঝপথে এসে এই বছরে আবাদ করতে গিয়ে থেমে গেছে, কারণ চীন অস্ট্রেলিয়ান বার্লির ওপর পাঁচ বছর ধরে ৮০ ভাগ ট্যারিফ বসিয়েছে।
এই ঘোষণাটি তখনি এলো যখন চীনা কর্তৃপক্ষ অস্ট্রেলিয়ান বার্লির ওপর এন্টি-ডাম্পিং তদন্ত করে আসছিলো।এই ট্যারিফের ফলে সম্ভাব্য ক্রেতাদের জন্য বার্লির দাম অনেক বেশি হয়ে যাবে এবং এর ফলে অস্ট্রেলিয়া তার সবচেয়ে বড়ো বাজার হারাবে, যার মূল্যমান প্রায় বছরে ৫০০ মিলিয়ন ডলার।
এদিকে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ৩০০০ বার্লি উৎপাদকদের অধিকাংশই এ বছরের জন্য বীজ রোপন করে ফেলেছেন।
মিঃ মিওলিনি এবং তার পরিবার এখন দীর্ঘ শীতের কয়েক মাস অপেক্ষা করবেন এই সিদ্ধান্তের জন্য যে এখন তাদের অর্থ ও সময় ব্যয় করা উচিত হবে কিনা, কারণ এই পন্য খুব তাড়াতাড়িই বিক্রি হয়ে যাবে এমন নয়।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অস্ট্রেলিয়ান বার্লি রপ্তানির ব্যাপারে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অবৈধ ডাম্পিংয়ের অভিযোগের তদন্ত করছিলো।
অস্ট্রেলিয়ান সরকার এবং বিভিন্ন বাণিজ্য গ্রূপগুলোও তদন্ত করে এবং এই সপ্তাহে তারা দৃঢ়ভাবে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে।
রাইস টার্টন ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ফার্মারদের সভাপতি এবং গ্রেইন গ্রোয়ারস বোর্ড অফ ডিরেক্টরসের সদস্য।
তিনি বলেন, বার্লির দাম সেখানে একবার বেড়ে গিয়েছিলো, তখন এর সাথে কাকতালীয় ভাবে ডাম্পিং তদন্তও শুরু হয়েছিল। কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে চীন অন্য কোন কারণে বিরক্ত, আমি যদি বর্তমান পরিস্থিতির কথা ভাবি, কারণ ১৮ মাস আগে শুরু হওয়া ডাম্পিংয়ের দাবি থেকে কিছুই প্রমান করা যায়নি।
ফেডারেল সরকার এবং ইন্ডাস্ট্রি গ্রূপগুলো এখন চাচ্ছে যেন এই ট্যারিফ কমানো হয় অথবা পুরোপুরি বাদ দেয়া হয়, এটা হতে পারে ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনে আপিলের মাধ্যমে অথবা চীন-অস্ট্রেলিয়া ফ্রি ট্রেড চুক্তির আওতায় সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে।
ফেডারেল ট্রেড মিনিস্টার সাইমন বার্মিংহাম বলেন, অস্ট্রেলিয়া যদি আপিল করে তা মূলত ফোকাস করবে ডাম্পিং দাবির বিরুদ্ধে, তারা কোবিদ ১৯ -এর উৎস নিয়ে যে তদন্তের কথা বলা হচ্ছে সেটি নিয়ে কূটনৈতিক যুদ্ধে যাবে না।
বিরোধী দলের কৃষি বিষয়ক মুখপাত্র জোএল ফিটজগিবোন সরকারের এই অবস্থান সমর্থন করেন
রাইস টার্টন বলেন, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে নতুন মার্কেট খোঁজা হচ্ছে।
প্রত্যাশা করা হচ্ছে ইতিমধ্যে রোপন করা শস্য এবং পরিশ্রমের মূল্য ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ফার্মাররা পাবেন