কভিড ১৯ মহামারীর সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান

A woman from a slum in Bangladesh fights for human rights (AAP).

A woman from a slum in Bangladesh fights for human rights (AAP). Source: AAP

মানবাধিকার কর্মীরা এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে অল্পবয়স্ক বালিকা এবং নারীদের ওপর কোরোনাভাইরাস লক ডাউনের সময় ব্যাপকহারে সহিংসতা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানিয়েছে।এক প্রতিবেদনে সারাবিশ্বের নেতৃবৃন্দ এবং সরকারগুলোর প্রতি নারীদের সুরক্ষার লক্ষে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানানো হয়েছে।এবং কোরোনাভাইরাস মহামারীতে সহিংসতার ঝুঁকি আরো বেড়েছে।প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারের লিংকটিতে ক্লিক করুন।


মানবিক স্বাস্থ্য সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে সারা বিশ্বে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়স্ক ২৪৩ মিলিয়ন কিশোরী এবং পূর্ণবয়স্ক নারী যৌন নিগ্রহ এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার।এবং কোরোনাভাইরাস মহামারীতে সহিংসতার ঝুঁকি আরো বেড়েছে।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, সারাবিশ্বে লকডাউন চলতে থাকায় প্রতি তিন মাসে অতিরিক্ত ১৫ মিলিয়ন নারীর সহিংসতার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালেররিজিওনাল ডিরেক্টর ভাগ্যশ্রী ডেঙলী বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।
অস্ট্রেলিয়ান এইড এজেন্সী সেভ দা চিলড্রেনের সাথে যৌথভাবে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল কিশোরী এবং নারীদের ওপর কোরোনাভাইরাস লকডাউনের সময় ব্যাপকহারে সহিংসতা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানিয়েছে।

এই দুই মানবহিতৈষী সংগঠনের উদ্যোগে প্রকাশিত রিপোর্টটির নাম 'বিকজ উই ম্যাটার'।এতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এবং সরকারগুলোকে নারীদের সুরক্ষা দিতে জরুরী এবং সুচিন্তিত কর্মসূচী গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।এই রিপোর্টে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে পারিবারিক সহিংসতার শিকার নারীদের সাহায্য চাওয়ার উপাত্ত দেখানো হয়েছে।

ভারতে ন্যাশনাল হেল্পলাইনে লকডাউনের প্রথম ১১ দিনে ৯২,০০০ কল আসে।এদিকে প্রথম সপ্তাহেই চাইল্ডলাইন ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন ৯২,১০৫টি কল পায় সহিংসতা এবং নিগ্রহের শিকার শিশুদের কাছ থেকে।
মিজ ডেঙ্গলে বলেন, আরো অনেক কিছু করতে হবে।তিনি বলেন, ভারত সরকার চলতি স্বাস্থ্য সংকটে বিপর্যস্ত এবং এর ফলে পারিবারিক সহিংসতার মত বিষয়গুলো সবাই ভুলতে বসেছে।

রিপোর্টে দেখা যায়, নেপালের এক জরিপে ৩৭ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছে শিশুদের ওপর সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার সাথে তাদের দেশে করোনাভাইরাস লক ডাউন সরাসরি জড়িত।একইভাবে বাংলাদেশে বেশিরভাগ সহিংসতার শিকার হচ্ছে শিশু এবং কিশোরীরা, যাদের বেশিরভাগ গ্রামের দারিদ্রপীড়িত এলাকা এবং শহরের বস্তিগুলোতে বাস করে।

কিশোরীরা গবেষকদের বলেছে তারা ঘরে বড় ধরণের শাস্তি পাচ্ছে।অস্ট্রেলিয়াতেও কভিড ১৯-এর প্রভাবে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা বাড়ছে।
অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ক্রিমিনোলজি পরিচালিত এক সমীক্ষা থেকে দেখা যায় দুই-তৃতীয়াংশ নারী যারা যৌননিগ্রহ এবং শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার তারা বলেছে মহামারী শুরু থেকে এই নির্যাতন আরো বেড়েছে।

রেপ এন্ড ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স সার্ভিসেস অস্ট্রেলিয়ার এক্সেকিউটিভে অফিসার কারেন উইলিস বলেন, কভিড ১৯ সংকটের সময়ে নারীদের ওপর নানা প্রকারের সহিংসতার খবর আসছে।মিজ উইলিস বলেন, পারিবারিক সহিংসতার সার্ভিসগুলোকে আরো বেশি কার্যকর করতে হবে।

মেলবোর্নের লকডাউনে যখন কয়েক মিলিয়ন বাসিন্দা ঘরে থাকছেন, তখন পারিবারিক সহিংসতা থেকে বেঁচে যাওয়া নারীদের নিরাপত্তার শংকা আরো বেড়েছে।মিশন অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস, ভিক্টোরিয়া এবং এসিটি শাখার স্টেট ডিরেক্টর নাদা নাসের বলেন, তিনি উদ্বিগ্ন যে অনেক তরুণীরা তাদের সহিংস পরিবেশ থেকে রক্ষা পাবে না যদি আবারো লক ডাউনের পরিস্থিতি ফিরে আসে।

আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ যদি পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয় তবে কল করুন 1800RESPECT বা 1800 737 732 এই নাম্বারে অথবা জরুরী প্রয়োজনে কল করুন ০০০-তে।


Share