গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- চীনের কৌশলগত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার প্রয়োজনে কোয়াডকে আরও বৃহত্তর পদক্ষেপ নিতে এই জোট করা হয়েছে।
- টিকা প্রকল্পের অংশ হিসাবে এই গ্রুপটির লক্ষ্য ২০২২ সালের মধ্যে এশিয়া জুড়ে কমপক্ষে এক বিলিয়ন কোভিড -১৯ টি ভ্যাকসিন প্রেরণ করা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদি সুগা প্রথম চতুর্পক্ষীয় সিকিউরিটি সংলাপে অংশ নিয়েছে, যা "কোয়াড" জোট নামে পরিচিত।
ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মূল মেরিটাইম গণতন্ত্রি দেশগুলোকে একত্রিত করার লক্ষ্যে অনানুষ্ঠানিক ফোরামটি ২০০৭ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তবে এর আগে কেবল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পর্যায়ে মিলিত হতে দেখা গিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, অঞ্চলটিকে সুরক্ষিত করতে একটি কৌশল ঠিক করতে এই ঐতিহাসিক বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, " আপনারা জানেন যে আমাদের সামনে একটি বড় এজেন্ডা রয়েছে, আমি আমাদের প্রত্যাশা সম্পর্কে আশাবাদী। কোয়াড ইন্দো-প্যাসিফিকের সহযোগিতার এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গভূমি হতে চলেছে I আগামী বছরগুলিতে আপনাদের সবার সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি।"
প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন যে এই দেশগুলো যখন তাদের আস্থা ও সাধারণ মূল্যবোধ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় তখন অনেক কিছুই করা সম্ভব।
তিনি বলেন, "এভাবেই আমরা সমস্ত অঞ্চলকে অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য স্থিতিশীল এবং সুরক্ষিত রাখবো যাতে আপনি আমাদের বিশ্বে এবং অস্ট্রেলিয়ায় একটি মুক্ত জীবন যাপন করতে পারেন।"
একটি নতুন কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন জোট গঠনই নেতাদের মধ্যে আলোচনার মূল ফলাফল হিসেবে বেরিয়ে এসেছে।
চীনের কৌশলগত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার প্রয়োজনে কোয়াডকে আরও বৃহত্তর পদক্ষেপ নিতে এই জোট করা হয়েছে, যেখানে নেতারা একমত হয়েছেন যে তারা জবরদস্তি মুক্ত থাকবেন, বেইজিংয়ের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর পরিবর্তে বাস্তব সমাধান খুঁজে নেবেন, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরো বৈচিত্র্যপূর্ণ করবেন।
কোভিড -১৯ মহামারী সম্পর্কে কোয়াড বলছে যে, এটি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন উৎপাদন এবং বিতরণকে মূলত এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোকে এবং কোভাক্স সদস্যদের সহায়তা করার জন্য তাদের চিকিৎসা ও উৎপাদন ব্যবস্থাগুলোকে ব্যবহার করার চেষ্টা করবে।
টিকা প্রকল্পের অংশ হিসাবে এই গ্রুপটির লক্ষ্য ২০২২ সালের মধ্যে এশিয়া জুড়ে কমপক্ষে এক বিলিয়ন কোভিড -১৯ টি ভ্যাকসিন প্রেরণ করা।
ভারত বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন নির্মাতা এবং আমেরিকান ভ্যাকসিন তৈরির জন্য তার উৎপাদন ক্ষমতাটি ব্যবহার করবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন যে বিশ্বব্যাপী ভাইরাস টিকা দেওয়ার মতো অনেক চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেটিই আসলে কোয়াডের মূল বিষয়।
তিনি বলেন, "আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং একটি মুক্ত, উন্মুক্ত এবং সম্মিলিত ইন্দো-প্যাসিফিকের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি দ্বারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আজ আমাদের এজেন্ডা ভ্যাকসিন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং উদীয়মান প্রযুক্তি মতো বিষয় যার মাধ্যমে কোয়াড বিশ্বব্যাপী কল্যাণের জন্য একটি শক্তিরূপে আবির্ভুত হবে।"
বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনও আলোচ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত ছিল। জাপানের প্রধানমন্ত্রী মিঃ সুগা একজন অনুবাদকের মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় এই অঞ্চলের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, "গতকাল গ্রেট ইস্ট জাপানের ভূমিকম্পের দশম বার্ষিকী ছিল। বিপর্যয়ের প্রতিক্রিয়ায় আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের কাছ থেকে প্রচুর সমর্থন পেয়েছি। জো বিপর্যয়ের পরপরই ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন এবং আমি আপনাদের আবারও ধন্যবাদ জানাই।"
কোয়াড নেতারা এই বছর শেষের আগে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করার পরিকল্পনা করছেন।
প্রধানমন্ত্রী মরিসন বলেছেন, এ জাতীয় সম্মেলন ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলের শক্তি কে প্রকাশ করে।
তিনি বলেন, "বিশ্বব্যাপী মহামারী এবং বৈশ্বিক মন্দা থেকে আমরা যেমন একত্রিত হয়েছি এবং আমরা একসাথে একটি আলাদা ভবিষ্যত তৈরি করতে পারব। ইন্দো-প্যাসিফিকই এখন একবিংশ শতাব্দীতে আমাদের বিশ্বের গন্তব্যকে রূপ দেবে।"
পুরো প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।
আরো দেখুনঃ