করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আরোপিত বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে যাচ্ছে সরকার

Prime Minister Scott Morrison arrives to give a coronavirus update at a press conference at Parliament House in Canberra, Friday, April 24, 2020. (AAP Image/Mick Tsikas) NO ARCHIVING

Prime Minister Scott Morrison arrives to give a coronavirus update at a press conference at Parliament House in Canberra, Source: AAP

কোভিড-১৯ এর প্রাদূর্ভাব অস্ট্রেলিয়ায় অনেকটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে এসেছে। ন্যাশনাল কেবিনেট কিছু নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আগামী সপ্তাহগুলোতে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞাগুলো আরও শিথিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ফেডারেল সরকার। প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারের লিংকটিতে ক্লিক করুন।


করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আরোপিত বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে যাচ্ছে সরকার। অস্ট্রেলিয়ায় এ পর্যন্ত কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন ৬,৬০০ এরও বেশি লোক এবং এদের মাঝে এ পর্যন্ত ৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ন্যাশনাল কেবিনেট মিটিংয়ে ফেডারাল সরকার একটি মডিলিং প্রকাশ করেছে। এতে দেখানো হয়েছে যে, বিদেশ থেকে আগত ও স্থানীয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে ছড়ানো, উভয় ক্ষেত্রেই করোনাভাইরাসের বিস্তার হ্রাস পেয়েছে।এ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে যে, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ সফল হয়েছে। একটি সিঙ্গেল কেস থেকে সংক্রমিত হওয়ার গড় ১ এর কম হওয়া প্রয়োজন।

ইউনিভার্সিটি অফ মেলবোর্ন-এর তৈরি মডেলিংটিতে দেখানো হয়েছে, তাসমানিয়া ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার সকল স্টেট এবং টেরিটোরিতে এই সংখ্যা ১ এর নিচে।এই ইতিবাচক চিহ্ন সত্ত্বেও, প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সতর্ক করে বলেছেন যে, নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেওয়া হলে আরও বেশি প্রাদূর্ভাব দেখা যাবে।তিনি বলেন, সরকারের পরবর্তী অগ্রাধিকার হচ্ছে, সংক্রমণের নতুন ক্লাস্টারগুলো দ্রুত শনাক্ত করা এবং সেসব অঞ্চলে বিভিন্ন রিসোর্স সরবরাহ করা।

কোভিড-১৯ পরীক্ষার মানদণ্ড আরও সম্প্রসারিত করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে সরকার। হাল্কা লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিদেরকে পরীক্ষা করা হবে।
শতকরা ৯৩ ভাগ লক্ষণবিহীন কেস শনাক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের সর্বোচ্চ রিপোর্টেড ডিটেকশন রেট-এর জন্য গর্ব করছে অস্ট্রেলিয়া।
বিদেশ থেকে আগত ভ্রমণকারীদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকার কারণে, স্থানীয় কেসগুলোর তুলনায় এখন আমদানিকৃত কেস গুলোর সংখ্যা ৯৯ শতাংশ কমে গেছে।

সরকারের সক্রিয় নজরদারি তৎপরতার অংশ হিসেবে কোভিড-১৯ পরীক্ষা অনেক বাড়ানো হবে। এর মাধ্যমে ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদেরকে পরীক্ষা করা হবে, এমনকি যদি তাদের মাঝে কোনো লক্ষণও না দেখা যায়।চিফ মেডিকেল অফিসার ব্রেন্ডন মারফি বলেন, নিষেধাজ্ঞাগুলো কমানোর আগে কমিউনিটিতে সংক্রমণ শনাক্তকরণ সুনিশ্চিত করতে হবে।

শিক্ষার্থীদেরকে স্কুলে ফিরে যেতেও উদ্বুধ্ধ করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, ক্লাসরুম গুলোতে সোশাল ডিস্টেন্সিং রুলগুলো প্রয়োগ করা হবে না।শিক্ষার্থীদেরকে পরস্পরের মাঝে ১.৫ মিটার দূরত্ব কিংবা ৪ বর্গমিটারের নিয়মও পালন করতে হবে না।শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য, স্বাস্থ্য-বিধি পালনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দরজার হাতল, ডেস্ক, কম্পিউটার, হ্যান্ড রেইল এবং খেলার মাঠের সরঞ্জাম প্রতিদিন একাধিকবার পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে।

এ পর্যন্ত, শিক্ষার ক্ষেত্রে স্টেট ও টেরিটোরিগুলো তাদের নিজেদের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ক্লাসে যোগদান থেকে নিয়ে দূর-শিক্ষণের ব্যবস্থাও।ক্লাসরুমে এই ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার হার অনেক কম বলে জোর দিয়ে বলেন প্রফেসর মারফি।

ন্যাশনাল কেবিনেট আরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, গত মার্চে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর বাইরে আরও বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের আগে এজড কেয়ার ফ্যাসিলিটিগুলোকে অনুমতি নিতে হবে।প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, লকডাউন বা ভিজিটর ব্যানগুলো কার্যকর করা যাবে না, যদি না কোনো ফ্যাসিলিটিতে সংক্রমণের প্রাদূর্ভাব ঘটে।

মিস্টার মরিসন বলেন, ওয়েস্টার্ন সিডনি এবং নর্থ-ওয়েস্ট তাসমানিয়ার মতো স্থানগুলোতে, যেখানের নার্সিং-হোমগুলোতে কোভিড-১৯ এর হটস্পট রয়েছে, সেসব স্থানে নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখার যৌক্তিকতা রয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জোর দিয়ে আরও বলছে যে, বাইরে, জনসমক্ষে ফেস মাস্ক পরিধানের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে না।অস্ট্রেলিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা কম। কিছু কিছু মাস্কের মান অনেক নিম্ন এবং এগুলো পরিধান করে নিজের নিরাপত্তা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা জন্মায়। এগুলো সঠিকভাবে নিরাপত্তা বিধান করে না।

কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা এবং খেলাধুলা ও বিনোদনের ক্ষেত্রে নতুন গাইডলাইন তৈরি করতে একমত হয়েছে স্টেট ও টেরিটোরিগুলো।জাতীয়ভাবে এবং খাত-ওয়ারী এসব গাইডলাইন তৈরি করা হলে মানুষ স্বাভাবিকভাবে কাজে যোগ দিতে পারবে।নিরাপদ কর্মক্ষেত্র এবং যদি কোনো প্রাদূর্ভাব ঘটে তখন করণীয় বিষয়াদি এতে থাকবে।

প্রফেশনাল স্পোর্টিং লিগগুলোর জন্য ফেডারাল ও স্টেট নেতৃবৃন্দ অচিরেই পরিকল্পনা তৈরি করবেন।সম্প্রদায়গুলোতে খেলাধুলা ও আমোদ-প্রমোদের ক্ষেত্রেও এবং ব্যক্তিগত পর্যায়েও, যেমন, সার্ফিং করা ও হাঁটা, এসব নিয়ে গাইডলাইন তৈরি করা হবে।

আগামী ১ মে ন্যাশনাল কেবিনেট পুনরায় সভা করবে।

আপনার ভাষায় করোনাভাইরাসের আপডেট পেতে sbs.com.au/coronavirus ভিজিট করুন।


Share