ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশের একটি স্বায়ত্তশাসিত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ ভারতে অক্সব্রিজ শিক্ষা ব্যবস্থা অনুসরণে এটি স্থাপিত হয়।
প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই বিভিন্ন প্রথিতযশা বৃত্তিধারী ও বিজ্ঞানীদের দ্বারা কঠোরভাবে এর পাঠক্রমের মান নিয়ন্ত্রিত হবার প্রেক্ষাপটে এটি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে স্বীকৃতি পায়।
এবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একশ বছর পূর্তি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা সুনামের সাথে কাজ করছেন।
এসবিএস বাংলার সাথে এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং বর্তমানে কার্টিন ইউনিভার্সিটির আর্থ এবং প্লানেটারি সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক ডঃ আশরাফ দেওয়ান।ডক্টর আশরাফ দেওয়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম গর্বিত প্রাক্তনী। এসবিএস বাংলার সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি ছাত্রকালের স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন যে, ঢাঃবিঃতে পড়ার সময়কাল তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় ছিল। আজও সেসব দিনের কথা কথা ভেবে রোমাঞ্চ অনুভব করেন তিনি।
Dr Ashraf Dewan is a D.U. alumnus currently teaching at the Curtin University, Australia. Source: Dr Ashraf Dewan
তিনি নব্বই দশকের উত্তাল সময়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনে সামিল ছিলেন, ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় হ্যান্ডবল দলের অধিনায়ক। তার নেতৃত্বে ঢাঃবিঃ হ্যান্ডবল তিনবার টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
ছাত্র হিসাবে দূর্দান্ত মেধাবী ছিলেন ডক্টর আশরাফ। বহুমুখী কর্মকান্ডে যুক্ত থাকার সুবাদে কেবল নিজের বিভাগে নয়, অন্য বিভাগেও তিনি সুপরিচিত ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অভিজ্ঞতা তাঁর জন্য যুগপৎ গৌরবের, আনন্দের ও অনুরেণার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি আগামী দিনের প্রেরণা জোগায়
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান অবনমন হচ্ছে এমন অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। তিনি এ বিষয়ে একমত পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়নে কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন।
ডক্টর আশরাফ মনে করেন যে, বিশ্ববিদ্যলয়ের পূর্বের গৌরব ফিরিয়ে আনতে কর্তৃপক্ষের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার।
'দ্বিতীয়ত শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করা সময়ের দাবী" বলেছেন তিনি। কেননা একসময় এই রাজনীতির প্রয়োজন ছিলো, এখন নেই।
এই প্রসংগে তিনি বলেন,
"শতবর্ষী এই প্রতিষ্ঠানকে জ্ঞানের রাজ্যে নেতৃত্ব দিতে হবে, লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতিতে নয়"
কর্তৃপক্ষকে রাজনীতির উর্ধ্বে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করতে জোর দিয়েছেন তিনি।
শিক্ষা গবেষণায় সরকারের বরাদ্দ অবশ্যই জরুরি। কিন্তু এক্ষেত্রে ইরানের কলাবরেটিভ রিসার্চ এর অর্জনকে বিবেচনা করা যায়। বিভিন্ন অবরোধের মধ্যেও তারা শিক্ষা ও গবেষণায় প্রভূত উন্নতি করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশে পরিচালিত হওয়ায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনা যায় না। অন্যদিকে শিক্ষকদের জবাবদিহিতার ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়। কেবল বরাদ্দ কিংবা আয় বাড়ালেই শিক্ষার মান বাড়বে না। এজন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতিরও পরিবর্তন দরকার মনে করেন ডক্টর আশরাফ দেওয়ান।