গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- অস্ট্রেলিয়ান ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিক্সের জুন ত্রৈমাসিকের সবচেয়ে সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছে মুদ্রাস্ফীতি ৭ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশে নেমে এসেছে।
- তবে কয়েকজন অর্থনীতিবিদ সতর্ক করে বলেছেন যে আর কোনো হার বৃদ্ধি মন্দার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
- বছর শেষ হওয়ার আগে সুদের হার বৃদ্ধির বিষয়টি উড়িয়ে দেয় না।
অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য ভালো খবর হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতির উত্তাপ থেকে শীতল হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে - যদিও আরবিএ গভর্নর ফিলিপ লোই সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে মুদ্রাস্ফীতির বর্তমান হার "এখনও খুব বেশি"।
মঙ্গলবার একটি বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়ার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর ফিলিপ লোই বলেন, "মূল্যস্ফীতি যাতে একটি যুক্তিসঙ্গত সীমার লক্ষ্যে ফিরে আসে তা নিশ্চিত করতে আর্থিক নীতি আরও কিছু কঠোর করার প্রয়োজন হতে পারে, তবে এটি তথ্য-উপাত্ত এবং ঝুঁকির ক্রমবর্ধমান মূল্যায়নের উপর নির্ভর করবে।"
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেছেন "বোর্ড মূল্যস্ফীতিকে কমিয়ে আনার লক্ষ্যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং এটি অর্জনের জন্য যা যা করা দরকার তা করবে।"
অস্ট্রেলিয়ান ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিক্সের জুন ত্রৈমাসিকের সবচেয়ে সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছে মুদ্রাস্ফীতি ৭ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশে নেমে এসেছে, কিন্তু এটি এখনও আরবিএ'র লক্ষ্যমাত্রা ২-৩ শতাংশের অনেক উপরে।
লোই মঙ্গলবার তার বিবৃতিতে বলেছেন যে মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ প্রায় ৩.২৫ শতাংশে নেমে আসবে এবং ২০২৫ সালের শেষের দিকে আরবিএর লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তার মানে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ানদের এই উচ্চ সুদ হারের প্রভাব আরো বেশ কিছু দিন মেনে নিতে হবে।
কিন্তু এই ক্রমবর্ধমান সুদের হারের প্রভাব কীভাবে অনুভব করছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা?
অস্ট্রেলিয়ার ছোট ব্যবসাগুলি গত এক বছরে ১২ বার সুদের হার বৃদ্ধির চাপ অনুভব করছে।
কাউন্সিল অফ স্মল বিজনেস অর্গানাইজেশনস অস্ট্রেলিয়ার সিইও লিউক আকের স্ট্রাট বলছেন যে এই বছরটি ছিল কঠিন এবং বেশ কিছু ব্যবসা টিকে থাকতে পারেনি।
তিনি বলেন, "ভাড়া এবং বীমার প্রিমিয়ামও বাড়ছে। সুদ হার বৃদ্ধির সাথে সাথে এসব খরচও প্রভাব ফেলে। অনেক ছোট ব্যবসা ক্রমাগত নতুন কিছু করে যাচ্ছে তাদের গ্রাহকদের খুশি করার জন্য। অনেকে তাদের পরিচালনার সময় কমিয়ে আনছে বিদ্যুৎসহ অন্যান্য খরচ কমানোর জন্য।
মি. আকের স্ট্রাট বলছেন যে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আশা করছেন যে সুদের হার টানা দ্বিতীয় মাসের জন্য স্থগিত থাকবে এবং সেইসাথে আগামী ছয় মাসে (সুদ হার নিয়ে) কী হতে যাচ্ছে তার একটি স্পষ্ট ব্যাখ্যা।
এদিকে মূল্যস্ফীতির হার প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত নেমে আসছে, গত জুনের তুলনায় ১ শতাংশ কমেছে।
কিন্তু এটি এখনও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লক্ষ্যমাত্রা ২ থেকে ৩ শতাংশের অনেক বেশি।
অর্থনীতিবিদ স্টিফেন কৌকুলাস মার্কেট ইকোনমিক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
তিনি আগস্ট মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বৈঠকে সুদ হার বাড়বে না বলে আগেই প্রত্যাশা করেছিলেন।
তিনি বলছেন, "অর্থনীতিবিদ এবং আর্থিক বাজারের মধ্যে ঐকমত্য নেই। আমরা গত সপ্তাহে যে মুদ্রাস্ফীতির হার দেখেছি, এবং সেই সাথে জুন মাসে খুচরা বিক্রয়ের দুর্বল হার থেকে ধারণা করা গিয়েছিল যে আরবিএ হয়তো সুদ হার বাড়াবে না। কারণ অর্থনীতি মন্থর হয়ে পড়ছে। মুদ্রাস্ফীতি কমছে এবং আমরা সবাই চাই যে এটি হোক - এবং মুদ্রাস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের চাপ আরো তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রিত হোক, যা ইতিমধ্যে ঘটছে। তবে এক মাস সুদ হার বৃদ্ধি থেকে বিরতি দেওয়ার অর্থ এই নয় যে এই চক্র শেষ হয়ে গেছে। এটি তাদের হজম করার জন্য সময় দিচ্ছে যে মুদ্রাস্ফীতির চাপ থেকে অর্থনীতি মুক্তি পাচ্ছে কিনা।"
মি. কৌকুলাস মনে করেন যে এ বছর শেষ হওয়ার আগে হয়তো আরেকটি হার বৃদ্ধি হতে পারে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রাক্তন অর্থনীতিবিদ ক্রিস রিচার্ডসন বলেছেন যে বৈশ্বিক প্রবণতাগুলি থেকে মনে হচ্ছে যে আমরা মুদ্রাস্ফীতির চ্যালেঞ্জ থেকে বেরিয়ে আসছি।
যদিও তিনি বলেছেন যে বছর শেষ হওয়ার আগে সুদের হার বৃদ্ধির বিষয়টি উড়িয়ে দেয় না।
তবে কয়েকজন অর্থনীতিবিদ সতর্ক কর বলেছেন যে আর কোনো হার বৃদ্ধি মন্দার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
ক্যানবেরার ইউনিভার্সিটির ডক্টর জন হকিন্স বলেছেন এটি একটি সূক্ষ্ম ভারসাম্যমূলক বিষয়।
কাউন্সিল অফ স্মল বিজনেস অর্গানাইজেশনস অস্ট্রেলিয়ার লিউক আকেরস্ট্রাট আশা করেন যে মুদ্রাস্ফীতি মোকাবেলায় বিকল্প কৌশলের উপর ফোকাস করা উচিত।
তিনি বলেন, অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী কাঠামোগত সংস্কার, ছোট ব্যবসার জন্য লাল ফিতার দৌরাত্ম এবং কর্মী ঘাটতি পূরণে সহায়তা করার জন্য দক্ষ কর্মীদের অভিবাসন সহজ করার বিষয়গুলি সরকারের বিবেচনা করা উচিত।