চীনের কোভিড-১৯ সঙ্কট পরিচালনা করার বিষয়টি আন্তর্জাতিক তদন্তের আওতায় এসেছে। অস্ট্রেলিয়ান সরকার স্বতন্ত্র পর্যালোচনা করার জন্য চাপ দিচ্ছে।
এই রোগটি যা ১৯৯৯ সালের শেষের দিকে চীনের উহান শহরে প্রথম দেখা দিয়েছিল, তখন থেকে বিশ্বজুড়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছে এবং কমপক্ষে ২.৩ মিলিয়ন মানুষ সংক্রমিত হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা এই মহামারীটির তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়ার আশা করছেন, তবে ভাইরাসটির উৎস এখনও জানা যায় নি।
অস্ট্রেলিয়ার ফরেন মিনিস্টার ম্যারিস পেইন এর প্রাদূর্ভাব সম্পর্কে চীনের স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এবিসি-কে তিনি বলেন, একটি স্বাধীন তদন্ত এর প্রাদূর্ভাবের উৎসের বিষয়ে আলোকপাত করতে পারে।
মিজ পেইন মানবাধিকার সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে পূর্ববর্তী আন্তর্জাতিক পর্যালোচনার সাফল্যের কথা তুলে ধরেছেন।
তবে তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তদন্তের নেতৃত্ব দেওয়া উচিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে “চীন-কেন্দ্রিক” বলে অভিযোগ করেছে এবং সংস্থাটির তহবিল প্রত্যাহারের পরে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে।
মিজ পেইন বলেন, স্বচ্ছতা এবং আন্তর্জাতিক ঐক্য পর্যালোচনা প্রক্রিয়ার মূল চাবিকাঠি।
হেলথ মিনিস্টার গ্রেগ হান্টের কথায়ও একই সুর প্রতিধ্বনিত হলো।
তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পোলিও, হাম এবং ম্যালেরিয়ার মতো রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সফল হয়েছে, তবে, কোভিড-১৯ এর প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বকে সাহায্য করতে পারে নি।
মন্ত্রী কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে অস্ট্রেলিয়ার কথা তুলে ধরে বলেন, সরকার স্বাধীন তদন্তের বিষয়টি সমর্থন করে।
মিজ পেইনের প্রস্তাব অস্ট্রেলিয়ায় দ্বিপক্ষীয় সমর্থন পেয়েছে। লেবার দল বিশ্বজুড়ে নেতৃত্ব দেখাতে এবং তদন্তটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য কোয়ালিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
লেবার দলের ফরেন অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক মুখপাত্র পেনি ওয়াং বলেন, এই ভাইরাসটির উৎস সম্পর্কে বিশ্বের স্বার্থেই জানা দরকার।
এদিকে, এই সঙ্কট মোকাবেলায় চীনকে আরও বেশি সন্দেহ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চীনের স্বচ্ছতা ও অসামঞ্জস্যজনক মৃত্যুর সংখ্যার সমালোচনা করেছেন, যা পূর্বে অনিবন্ধিত হাজার হাজার মৃত্যুর জন্য সংশোধিত করা হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে যে, কোভিড-১৯ উহানের একটি আর্দ্র/ভেজা বাজারে শুরু হয়েছিল। ইউ-এস-এর কর্মকর্তারা দাবি করছেন যে, এটি একটি নিকটস্থ ল্যাবে তৈরি হয়েছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন যে, যদি চীন সরকার জেনেশুনে ভাইরাসটি ছড়িয়ে থাকে, তবে এর পরিণতিতে তাদেরকে ভুগতে হবে।
উহান ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি এবং চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, উভয়ই এই ভাইরাসটি তৈরি করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ফরাসি সরকারও পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে যে, ভাইরাস এবং উহান গবেষণা পরীক্ষাগারের মধ্যে কোনো যোগসূত্রের প্রমাণ নেই।
আপনার ভাষায় করোনাভাইরাসের আপডেট পেতে sbs.com.au/coronavirus ভিজিট করুন।