একটি সন্ত্রাসবাদী ক্যাম্পের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার জন্য ৮২ বছর বয়স্ক আবু বাকার বশির ২০১১ সাল থেকে জেলে ছিলেন।
রাতের অন্ধকারে এবং স্থানীয় নিরাপত্তা রক্ষীদের দ্বারা পরিবেষ্টিত মৌলবাদী নেতা আবু বাকার বশির গুনুং সিন্দুর ডিটেনশন সেন্টার থেকে একজন মুক্ত মানুষ হয়ে বের হয়ে গেলেন।
সাদাকোট এবং ফেস মাস্ক পরিহিত ৮২ বছর বয়স্ক এই ব্যক্তি কিছুক্ষন দাঁড়ালেন জেলের কর্মকর্তাদের সাথে ছবি তোলার জন্য।
তিনি এমনকি একটি বিবৃতিও দিয়েছেন যারা তাকে সমর্থন দিয়েছে তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে, এরপর তিনি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। তাকে বহন করার জন্য গাড়ির দরোজা খুলে দেয়া হলে তিনি ভেতরে ঢুকলেন এবং সেটি চলে গেলো।
ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ কার্রেকশন্স-এর মুখপাত্র রিকা আপ্রিয়ান্তি বলেন, তার পরিবার আইনগতভাবে আবেদন করেছে মুক্তির সময়ে ভীড় এড়াতে।
বশির ছিলেন জেমা ইসলামিয়া নামের সন্ত্রাসবাদী গ্রূপের আধ্যাত্মিক নেতা - এই গ্রূপের বিরুদ্ধে ২০০২ সালে বোমা হামলা করে ৮৮ জন অস্ট্রেলিয়ানসহ ২০২ জন মানুষ হত্যার অভিযোগ আছে।
ইন্দোনেশিয়া সরকার কয়েকবার চেষ্টা করেও বশিরকে সরাসরি কুটা বীচের নাইটক্লাবে বোমা হামলার জন্য দায়ী করা যায়নি। তাকে ২০১১ সালে আরেকটি ভিন্ন সন্ত্রাসবাদী মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।
তার ১৫ বছরের দণ্ড পর্যায়ক্রমে কমিয়ে দেয়া হয় ভালো ব্যবহারের কারণে, এর ফলে তিনি আগেই মুক্তি পান। তবে তার আগাম মুক্তির খবরে ঘটনায় নিহতদের পরিবার-বন্ধুবান্ধব এবং বোম্বিং থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা ক্ষুব্ধ হয়েছে।
এই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া অ্যান্ড্রু সাবি বলেন, বশিরকে ১৮ বছর আগে বালিতে ঘটে যাওয়ার ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল, কিন্তু সে আগাম মুক্তি পেলো। সাবি সেসময় সারি ক্লাবে ঢুকেছিলেন।
ইয়ার্ন ল্যাজিনস্কি সৌভাগ্যবশত ওই ক্লাবটি থেকে বোমা বর্ষণের কয়েক ঘন্টা আগে বের হয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি ওই রাতে তার আরো পাঁচ বন্ধুকে হারিয়েছিলেন। তিনি আশংকা করছেন বশিরের মুক্তির ফলে ভবিষ্যতে আরো আক্রমণ হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, বশিরের মুক্তি বালি বোম্বিংয়ের সময় ৮৮ জন নিহত অস্ট্রেলিয়ান পরিবারের সদস্য ও বন্ধুবান্ধবদের বিচলিত করেছে।
কিন্তু বশিরের পুত্র বলেন, তার পিতাকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার চিন্তার কিছু নেই।
অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ গ্রেগরী ফিলি মনে করেন, অতি বৃদ্ধ এই মৌলবাদী নেতা এখন বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার নিরাপত্তার জন্য বড়ো কোন হুমকি হতে পারবেন না।
তবে তার মুক্তি ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী আক্রমণে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোকে এবং বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের খুব কমই স্বান্তনা দিতে পেরেছে।
পুরো প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন
আরো পড়ুনঃ