পরবর্তীকালে প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের আন্তরিকতা সেই দুঃখ ঘুচিয়ে দিয়েছিল।মৃত্যুর চার মাস পরে প্রকাশিত হতে চলেছে তাঁর লেখা শেষ বই ,দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ারস।বই আকারে প্রকাশ হওয়ার আগেই প্রণবের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের কিছু অংশ সামনে এসেছে।
যেখানে স্পষ্ট করে তিনি জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের এখনকার দশার জন্য দায়ী ছিলেন দলের সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী এবং প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ বছর শুরুতেই প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বইটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হবে।
রাষ্ট্রপতি ভবন ছাড়ার মুহূর্তে প্রণব মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন,বই লিখবেন। বই লিখে নিজের অবসর জীবন কাটানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। মৃত্যুর আগেই বই লেখার কাজ শেষ করে গিয়েছিলেন। কিন্তু তা প্রকাশ পায়নি। সেখানেই খোলাখুলিভাবে ২০০৪ সালের লোকসভা ভোটে ইউপিএ জোটের পর যে জয়ের মুখ দেখেছিল তা নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করেছেন তিনি।
বইয়ের যে টুকু অংশ প্রকাশ্যে এসেছে, তার মধ্যে প্রণব মুখোপাধ্যায় লিখেছেন সেসময়, কংগ্রেসের অনেকেই মনে করেন,২০০৪ সালে জয়ের পরে তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে ২০১৪ সালে কংগ্রেসের ভরাডুবি হত না।
কিন্তু এই ধারণার সঙ্গে প্রণব মুখোপাধ্যায় একমত হতে পারেন নি। তবে প্রণব মুখোপাধ্যায় মনে করতেন ২০১২ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে কংগ্রেসের রাজনৈতিক লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছিল। সনিয়া দলের বিষয়গুলি পরিচালনা করতে পারছিলেন না। সংসদে মনমোহনের দীর্ঘ অনুপস্থিতির ফলে সাংসদদের সঙ্গে যোগাযোগ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
সাংসদে মনমোহনের অনুপস্থিতির প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর তুলনা করেছেন দেশের প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। লিখে রেখেছেন ,প্রধানমন্ত্রীর উপরেই সরকারের নৈতিক কর্তৃত্ব, জাতির অবস্থা এবং প্রশাসনের কার্যকারিতা নির্ভরশীল।মনমোহন সিংহ ব্যস্ত ছিলেন জোট রক্ষায়। প্রশাসনে তার প্রভাব পড়েছিল। প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রথম মেয়াদে নরেন্দ্র মোদী অনেকটাই স্বৈরতান্ত্রিক পদ্ধতিতে চলেছেন। ফলে আইনসভা এবং বিচারবিভাগের সঙ্গে তিক্ততা তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে ,কংগ্রেসের ভিতরের কিছু লোকের চক্রান্তের জন্যে শরদ পওয়ারের সামনে দু’বার দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ আসা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি।পওয়ারের ৮০তম জন্মদিনে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন এনসিপি নেতা প্রফুল্ল প্যাটেল। পওয়ারের জন্মদিন উপলক্ষে শিব সেনার মুখপত্র সামনা-তে প্রকাশিত হয়েছে লেখাটি।সেখানে তিনি জানিয়েছেন, প্রথম সুযোগ এসেছিল ১৯৯১ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়।
রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর ধাক্কায় তখন কংগ্রেস বেসামাল।সেই সময় দলের হাল ধরার জন্য পওয়ারই ছিলেন যোগ্য ব্যক্তি। প্রফুল্ল লিখেছেন, শরদ পওয়ারকে দলের সভাপতি করার বেশ জোরালো দাবি ছিল।কিন্তু কয়েকজন ড্রয়িংরুমের রাজনীতিবিদ চাননি দলে কোনও শক্তিশালী নেতা আসুক। সেই জন্যই শেষপর্যন্ত পিভি নরসিমা রাওকে কংগ্রেস সভাপতি করা হয়। এরপর লোকসভা নির্বাচনে শরদ পওয়ারকে প্রধানমন্ত্রী করার দাবি উঠলে সেই একই কংগ্রেস নেতাদের চক্রান্তে শেষ পর্যন্ত নরসিমা রাওই প্রধানমন্ত্রী হন।
১৯৯৭ সালে ফের পওয়ারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ এসেছিল বলে দাবি করেছেন প্রফুল্ল প্যাটেল। তাঁর দাবি, সেই সময় কংগ্রেস সভাপতি সীতারাম কেশরি,দেবগৌড়া সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নিলে ১২৫ জন কংগ্রেস সাংসদ পওয়ারের বাড়ি আসেন।কিন্তু তাঁদের অনুরোধ সত্ত্বেও শরদ পওয়ার রাজি হননি। কেননা তার ঠিক আগেই ১৯৯৫ সালে দেবগৌড়া থেকে মুলায়ম সিং যাদবের মতো নেতারা ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন নরসিমাকে সরিয়ে তাঁকে প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবিদার করার জন্য।
কিন্তু নরসিমা, দেবগৌড়াকেই সমর্থন করেন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। এদিকে,এন সি পি সুপ্রিমো তথা বর্ষীয়ান নেতা শরদ পওয়ারের জন্মদিনেই নতুন অ্যাপ এনেছে মহারাষ্ট্র সরকার। বিশেষভাবে সক্ষমদের সুবিধার্থেই এই অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে, শরদ পওয়ারের নামেই,মহাশরদ অ্যাপ।