আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য বিশ্বের অনেক দেশ যখন তাদের সীমান্ত আবার উন্মুক্ত করেছে, তখন হেলথ মিনিস্টার গ্রেগ হান্ট তা পাশ কাটিয়ে বলেছেন অস্ট্রেলিয়ার সীমান্ত 'লম্বা সময়ের জন্য' বন্ধ থাকবে।
গত প্রায় তিন মাস ধরে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে এবং সিটিজেন ও স্থায়ী বাসিন্দাদের দেশের বাইরে যেতে দিচ্ছে না।
কিন্তু আগামী জুলাইয়ে কিছু আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ক্যানবেরাতে আসছে এবং মনে হচ্ছে বর্ডার রেস্ট্রিকশন হয়তো শিথিল করা হবে।
এখন কথা হচ্ছে তবে কি অস্ট্রেলিয়ার বাইরে ভ্রমণের জন্য শীঘ্রই অনুমোদন দেয়া হবে নাকি যারা বিদেশে পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের সাথে দেখা করতে যেতে চান তাদের কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন আবিষ্কার হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে?
'শান্তির দ্বীপ'
মিঃ হান্ট বলেন, আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণ করেই অস্ট্রেলিয়া কোভিড ১৯ সংক্রমণ কমিয়ে রাখতে সাফল্য দেখিয়েছে।যেখানে সারাবিশ্বে রোগী শনাক্তের সংখ্যা ৯ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে, ভারত, ব্রাজিল এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন দশ হাজার করে নতুন শনাক্ত হচ্ছে, সেই প্রেক্ষিতে মিঃ হান্ট অস্ট্রেলিয়াকে 'শান্তির দ্বীপ' বলে অভিহিত করেন।
Minister for Health Greg Hunt says borders will remain shut for a significant amount time. Source: AAP
যাদের বিদেশে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব আছে এবং তাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন, তাদের প্রতি তিনি আপাতদৃষ্টিতে এই ইঙ্গিতই দিতে চান যে ভ্যাকসিন না পাওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বর্ডার বন্ধ থাকবে।
ইউনিভার্সিটি অফ সিডনির স্কুল অফ পাবলিক হেলথের প্রধান প্রফেসর জোয়েল নেগিন বলেন, ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে হয়তো ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল শুরু করা যেতে পারে, তবে এখনো আমাদের অনেক দূর যেতে হবে।
তিনি বলেন, "ভ্যাকসিন হয়তো শীঘ্রই পাওয়া যাবে, মানুষও আস্তে আস্তে ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল শুরু করবে, কিন্তু ব্যাপক পর্যায়ে ভ্রমণ বা হলিডেতে হাওয়াই, থাইল্যান্ড বা আমেরিকায় যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরী হতে ২০২১-এর শেষ দিক থেকে বা তার পর থেকে শুরু হতে পারে।"
ট্রেড মিনিস্টার সাইমন বার্মিংহামও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আগামী বছরের শেষে গিয়ে হয়তো বর্ডার পুরোপুরি খুলতে পারে।
যে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আছে
তবে কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আছে, অস্ট্রেলিয়ানরা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে এক্সেম্পশন পেতে ডিপার্টমেন্ট অফ হোম এফেয়ার্সে আবেদন করতে পারেন, তবে সেক্ষেত্রে অনুমোদন পাওয়া খুবই দুরূহ। ডিপার্টমেন্ট অফ হোম এফেয়ার্সের মতে যারা ব্যবসা, সাহায্য সংস্থার কাজ বা মানবিক কারণ দেখতে পারবেন তারাই শুধু এক্সেম্পশন পাবেন।
নিউজিল্যান্ডে ভ্রমণ
অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যে চলাচল শুরু করা যায় কিনা এমন আলোচনা চলছে। জুলাইতে এমনই একটি ট্রায়াল ফ্লাইট শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু নিউজিল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়ার রাজ্যগুলোর বর্ডার বন্ধ থাকায় এবং কিছু জায়গায় নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
অস্থায়ী ভিসাধারীদের জন্য কি ব্যবস্থা আছে?
টেম্পোরারি ভিসাধারীরা যারা অস্থায়ী দক্ষ কর্মী এবং ওয়ার্কিং হলিডে ভিসায় কাজ আছেন তারা অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে যেতে পারবেন কিন্তু বর্ডার যতদিন বন্ধ থাকবে ততদিন আসতে পারবেন না।
যদিও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা অস্ট্রেলিয়া আসার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, কিন্তু ভারপ্রাপ্ত ইমিগ্রেশন মিনিস্টার এলান টাজ বলেন, টেম্পোরারি ভিসাধারীদের জন্য সরকারের করোনাভাইরাস ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে কোন এক্সেম্পশন দেয়ার পরিকল্পনা নেই।
আরো পড়ুন: