ভারতে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন বহু ফেক নিউজ ঘুরে বেড়িয়েছে।শুধু ফ্যাক্ট চেক করাই অবশ্য নয়,এই সব ফেক নিউজের চরিত্র বা প্রকৃতি বুঝতে বিশ্লেষণও করেছে একটি জাতীয় সংবাদ মাধ্যম।ফেক নিউজ ইন দ্য টাইম অব করোনাভাইরাস: এ ব্যুম স্টাডি শিরোনামে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে,করোনাভাইরাস পর্বে তারা মোট ১৭৮টি ভুয়ো,ভুল,অসত্য বা বিভ্রান্তিকর খবর-এর ফ্যাক্ট চেক বা সত্যতা যাচাই করেছে।এই ফেক নিউজ-এর ফাঁদে পা দিয়েছে অনেক সংবাদ মাধ্যমও।তবে একই সঙ্গে এটাও ঠিক,বহু সংবাদ মাধ্যমই প্রকৃত ঘটনা যাচাই করে ধরিয়ে দিয়েছে,কোনটা সঠিক খবর,আর কোনটা ফেক বা ভুয়ো।অর্থাৎ এই সব,ফেক নিউজ-এর ফ্যাক্ট চেক করেছে।
সেই রিপোর্ট উঠে এসেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সব ভুয়ো, ভিত্তিহীন, মিথ্য বা অসত্য, ভুল অথবা বিভ্রান্তিকর খবর ছড়িয়েছে,সেগুলি ৩৫ শতাংশের কাছাকাছি এসেছে ভিডিয়োর মাধ্যমে।টেক্সট ফর্ম্যাটে এসেছে তার প্রায় কাছাকাছি ২৯ শতাংশের মতো।অডিয়োতে ছড়িয়েছে ২ শতাংশের কিছু বেশি।আর প্রচলিত সংবাদ মাধ্যমের খবর হিসেবে ছড়িয়েছে প্রায় চার শতাংশ ফেক নিউজ।
ভারতে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল জানুয়ারিতে,কেরলে।সেখানে চিন ফেরত তিন জনের দেহে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে।তার পর থেকে সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে। মার্চের শেষ দিকে আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধ হয়েছে,দেশব্যাপী লকডাউন হয়েছে।এ ছাড়াও জনতা কার্ফু, তালি-থালি বাজানো, বারান্দায় মোমবাতি-প্রদীপ জ্বালানোর মতো ঘটনাও ঘটেছে দেশে।আর এই সময় থেকেই ফেক নিউজের বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে ভারত।কিন্তু উদ্বেগ বাড়ানোর মতো প্রবণতা লক্ষ করা গিয়েছে এপ্রিল মাসে।উঠে এসেছে সাম্প্রদায়িক ফেক নিউজ।
বহু ফেক নিউজে নিশানা করা হয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়কে।দিল্লির তবলিগি জামাতের ঘটনা সামনে আসার পর এই ধরনের ফেক নিউজ ছড়িয়েছে ভুরি ভুরি।আবার কয়েক বছর আগেকার একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে দাবি করা হয়েছিল,মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েক জন মানুষ থালায় থুথু লাগিয়ে করোনাভাইরাস ছড়াচ্ছেন। কিন্তু পরে দেখা যায়,আসলে ভাল উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছিল ভিডিয়োটি।থালা চেটে পরিষ্কার করে খেয়ে খাবার নষ্ট না করার বার্তা দিতে চেয়েছিলেন তাঁরা।বিশ্লেষকদের মনে করছেন, ভারতে এই ধরনের ফেক নিউজ ছড়ানো হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই।
তার সঙ্গে অবশ্য করোনাভাইরাস, লকডাউন,প্রতিকার,রাজনীতি,চিকিৎসকের পরামর্শের মতো টপিকও সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিংয়ের তালিকায় ছিল এই সময়।চিকিৎসক-সেলিব্রিটিকে জড়িয়ে ফেক নিউজও সামনে এসেছে অনেক।তবে এই সমস্ত টপিকের বাইরে অনেক ফেক নিউজই নির্দিষ্ট কোনও ধারায় ফেলা যায়নি।সেগুলি কার্যত স্বতন্ত্র,সমীক্ষা করা এই সংবাদ মাধ্যমের হিসেবে এই সংখ্যাটা ২৯ শতাংশের মতো।বাকি ৭১ শতাংশই করোনাভাইরাস, লকডাউন, সে সব নিয়ে রাজনীতি বা সাম্প্রদায়িক বিষয়ের উপর তৈরি হয়েছে।
সেগুলির মধ্যে আবার কোনটি কোন ফর্ম্যাটে, কোন মাধ্যমে বা কোন উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়েছে,তাও বিশ্লেষণে উঠে এসেছে,বিশ্লেষণ করা এই ফেক নিউজগুলির মধ্যে একটা বড় অংশেই টার্গেট করা হয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়কে।সেই বিশ্লেষণেই উঠে এসেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সব ভুয়ো,ভিত্তিহীন, মিথ্য বা অসত্য,ভুল অথবা বিভ্রান্তিকর খবর ছড়িয়েছে,সেগুলি ৩৫ শতাংশের কাছাকাছি এসেছে ভিডিয়োর মাধ্যমে।টেক্সট ফর্ম্যাটে এসেছে তার প্রায় কাছাকাছি ২৯ শতাংশের মতো। অডিয়োতে ছড়িয়েছে ২ শতাংশের কিছু বেশি।আর প্রচলিত সংবাদ মাধ্যমের খবর হিসেবে ছড়িয়েছে প্রায় চার শতাংশ ফেক নিউজ।