ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ-র রিপোর্ট সেই আশঙ্কা-ই সত্যি করছে।১৩ এপ্রিল প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে গবেষকরা বলেছেন,বাদুড়ে করোনাভাইরাস রয়েছে কিনা তা জানার জন্য ২০১৮-১৯ সালে সংগৃহীত মেডিয়াস ও রাউসটাস প্রজাতির বাদুড়ের লালারস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা চালান তাঁরা।সেই পরীক্ষায় বাদুড়ের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গিয়েছে।কেরল, হিমাচল, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরি এই ৪ জায়গায় বাদুড়ের উপর পরীক্ষা চালিয়ে রিপোর্ট পজিটিভ আসে।এই রিপোর্ট সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।উল্লেখ্য,ভারতে প্রায় ১১৭টি প্রজাতির বাদুড় রয়েছে।
এদিকে,কোভিড-১৯ পরীক্ষায় পজিটিভি রেজাল্ট এসেছে গুজরাটের এক কংগ্রেস বিধায়কের।কিন্তু তার থেকে উদ্বেগের বিষয় হল,কোভিড টেস্টের কয়েক ঘণ্টা আগেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি ও অন্যান্য বেশ কয়েকজন নেতা-মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।ফলে এখন বিপাকে পড়ে গিয়েছেন সবাই।গুজরাটের জামালপুর খেড়িয়ার ওই বিধায়কের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি, উপ মুখ্যমন্ত্রী নীতীন প্যাটেল,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী প্রদীপ সিং জাদেজা।মন্ত্রিসভার একাধিক মন্ত্রী ছাড়াও কংগ্রেসের ওই বিধায়ক দেখা করেছেন একাধিক সাংবাদিকের সঙ্গেও।ফলে চিন্তা বাড়ছে সবারই। প্রসঙ্গত,এখনও পর্যন্ত গুজারাটে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৬১৭।এদের অধিকাংশই আহমেদাবাদের।এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের।
থুতু ফেললে শাস্তি
এদিকে এবার ভারতে যেখানে সেখানে থুতু ফেললে শাস্তি পেতে হবে।কোভিড-১৯ নিয়ে সংকটের পরিস্থিতিতে এ বার কড়া নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।পাবলিক প্লেসে বা কাজের ক্ষেত্রে যেখানে সেখানে থুতু ফেলাটা এ বার শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।মারণ ভাইরাস রুখতে দেশজুড়ে মাস্কের ব্যবহারও বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্র।মঙ্গলবারই শেষ হয়েছে দেশে লকডাউনের প্রথম ধাপ।লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩ মে পর্যন্ত করা হয়েছে।এরপর বুধবার বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।সেখানেই থুতু ফেলা ও মাস্ক পরা নিয়ে কড়াকড়ি করা হয়েছে।বিভিন্ন রাজ্যকে কঠোরভাবে সেই নির্দেশিকা পালনের জন্য বলা হয়েছে।নির্দেশিকা না-মানলে শাস্তিবিধানের কথাও বলা হয়েছে নতুন নির্দেশিকায়।
বলা হচ্ছে,সামান্য ড্রপলেটসেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে কোভিড-১৯। এই অবস্থায় কোনওরকম ঝুঁকি নিতে চায় না কেন্দ্রীয় সরকার।২০১৩ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে আইন করে গুটখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যে পান মশলা ও জর্দার ব্যবহার এখনও নিষিদ্ধ না-হওয়ায় সেগুলির নাম করে গুটখার দাপট এখনও বজায় রয়েছে রাজ্যে।আগামী দিনে এ ছাড়া মাস্ক ব্যবহার নিয়েও কড়া পদক্ষেপ করেছে সরকার।আগেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে রাস্তায় বেরোলে মাস্ক পরাটা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছিল।এ বার গোটা দেশেই সেই নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
গামোসা থেকে মাস্ক
এর মধ্যেই কোভিড-১৯ সংক্রমণের মুখে এক সৃষ্টিশীলতার দেখা গিয়েছে অসমেও।সেখানকার গামোসা থেকে তৈরি করা হয়েছে অভিনব দর্শন মাস্ক।প্রান্তিক লাল ও বাকি অংশে সাদা রঙের গামছা সদৃশ এই গামোসা অসমের এক নিজস্ব সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞান।অসমের কামরূপ জেলার এক গ্রামে এবার সেই গামোসা থেকেই তৈরি করা হয়েছে মাস্ক।এর প্রান্তে বা কোনায় কেবল ফুলের নকশাই নয়, তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে হাতি,গণ্ডার কিংবা হাড়গিলের মতো অসমের বিপন্ন পাখিদের ছবিও। এভাবেই মাস্কটি হয়ে উঠেছে বন্য প্রাণ সংরক্ষণেরও বিশেষ বার্তাবাহী।সেই মাস্কই এবার ভাইরাসের কবল থেকে বাঁচানোর জন্য লড়াইয়ে নামছে।খুব সামান্য খরচেই এটি বানানো যায়।লকডাউনের সময় ইউটিউব দেখে মাস্ক বানানোর কৌশল শিখে গ্রামবাসীরা তার সাহায্যে গামোসা থেকে মাস্ক বানিয়েছেন ।এভাবেই সীমিত ক্ষমতায় গ্রামবাসীরা লড়াই করছেন প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ সংক্রমণের সঙ্গে। অসমের কামরূপ জেলার ডোডোরা গ্রামের অলাভজনক সংস্থা যারা হাড়গিলের মতো বিপন্ন পাখির মতো বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের জন্য লড়ছে,তাদেরই পরিকল্পনা মেনে গামোসাতে এঁকে দেওয়া হয়েছে হাড়গিলের মোটিফ।এই চিত্রবিচিত্র মাস্কের দাম পড়ছে ৩০ টাকা।বিহুর মরশুমে অসমে উপহার হিসেবে জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছে,চিত্রবিচিত্র এই মাস্ক।