এদিকে চিনের পর বিশ্বের সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশে করোনার টিকা দেওয়ার জন্য সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা,এমনটাই জানা গিয়েছে এই বিষয়ে ওয়াকিবহল মহলের তরফে। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার দেশের ১৩০ কোটি জনতাকে টিকা দিতে মাথা পিছু ৪৪০ থেকে ৫১৫ টাকা খরচ করবে।পাশাপাশি, সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে প্রত্যেক দেশবাসীকে টিকাকরণের জন্যে পর্যাপ্ত তহবিল সরকারের রয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারত জুড়ে উৎসবের মরশুমের আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন মোদি। সেখানে তিনি জানিয়েছেন,বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতের করোনা পরিস্থিতি ভাল।ভারতে মৃত্যু এবং করোনা আক্রান্তের হার অনেক কম।সুস্থতার হার অনেক বেশি।তবে একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন , লকডাউন উঠে গেলেও করোনাভাইরাস যায়নি।ফলে এই পরিস্থিতিতে সুরক্ষার ক্ষেত্রে কোনওরকম ঢিলেমি দেওয়া চলবে না।
যতক্ষণ না করোনার টিকা হাতে আসছে, ততদিন অসাবধানতার ফল মারাত্মক হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।তিনি বলেছেন,বহু বছর পরে এমন হল যে মানবজাতিকে রক্ষার জন্য বিশ্বে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে।বহু দেশ সেজন্য কাজও করছে। ভারতের বিজ্ঞানীরাও টিকার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। ভারতে এখন অনেকগুলি টিকার কাজ চলছে।’
এই অবস্থায় ২ অক্টোবর এই কোভ্যাক্সিন ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিল ভারত বায়োটেক। অবশেষে সেই অনুমতি মিলেছে।এর অর্থ হল,কেন্দ্রের এজেন্সি এই ভ্যাকসিনটির প্রথম দুই পর্যায়ের ট্রায়ালের ফলাফলে সন্তুষ্ট। এবং এখনও পর্যন্ত এই ভ্যাকসিনটি দেওয়ার পর মানবদেহে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, ভারত বায়টেকের তৈরি এই কোভ্যাক্সিন-র ট্রায়াল শুরু হয়েছিল বেশ কয়েক মাস আগেই।কোনও ভ্যাকসিন প্রি-ক্লিনিকাল ট্রায়াল অতিক্রম করলেই ক্লিনিকাল ট্রায়ালে যেতে পারে। প্রি-ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অর্থ, বিভিন্ন প্রাণীর শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা। কোভ্যাক্সিন সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পেরেছে। এখন চলছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। এই ট্রায়ালের প্রথম দুই পর্যায় মোটামুটি সাফল্যের সঙ্গে উতরে গিয়েছে বলে খবর।
এবার তৃতীয় পর্বে তারা ১৮ বছরের বেশি বয়সি ২৮ হাজার ৫০০ জনকে এই টিকা দেওয়া হবে। দেশের মোট ১০টি রাজ্যের ১৯টি জায়গায় এই পরীক্ষা চলবে। এর মধ্যে দিল্লি, মুম্বই, পাটনা, লখনউয়ের মতো বড় শহরেও হবে ট্রায়াল। এই প্রক্রিয়ায় সাফল্য এলেই লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবে ভারত বায়োটেক।
অর্থাৎ পুরো প্রক্রিয়া খুব শীঘ্রই সম্পূর্ণ হতে চলেছে।অক্সফোর্ডের তৈরি টিকার তৃতীয় পর্বের ট্রায়াল ইতিমধ্যে ভারতে শুরু করেছে সেরাম। মাঝখানে এক স্বেচ্ছাসেবক অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর কিছুদিন বন্ধ ছিল সেরামের টিকার ট্রায়াল। এবার ফের তা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে আবার ব্রাজিলে অক্সফোর্ড- অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকার ট্রায়ালের সময়ই এক স্বেচ্ছাসেবকের মৃত্যু হয়েছে। সেটা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে ভারতেও। তবে তা বলে এই টিকার ট্রায়াল বন্ধ করছে না সংস্থা।