করোনাভাইরাসের কারণে থমকে গেছে সমগ্র বিশ্ব। মানুষের জীবনে ভয়াবহ সঙ্কটের পাশাপাশি অর্থনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলছে। তবে এর মধ্যে ব্যতিক্রম অস্ট্রেলিয়ার নর্দার্ন টেরিটোরির ছোট্ট শহর ডারউইন।
৩ অক্টোবর ২০২০, শনিবার বাংলাদেশি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘বাংলাদেশী মেলা ২০২০’। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে নর্দার্ন টেরিটরি সরকারের শিক্ষামন্ত্রী লরেন মস এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটি গ্লোবালের ডিরেক্টর জোয়ান ক্রিস্টাল উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল নর্দার্ন টেরিটোরি সরকার ও চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটি।বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়। অতিথিবৃন্দ পুরস্কার বিতরণ করেন বাংলাদেশি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের জয়ী ও রানারআপ দলকে।
Source: Kawsar Ahmed
অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও অতিথিবৃন্দকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটির অ্যালামনাইরা অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় থাকার কারণে সময়ের প্রয়োজনে আরও এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে একটি বিশেষ ঘোষণা দেওয়া হয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠিত হওয়ার। নতুন গঠিত এই অ্যাসোসিয়েশান বাংলাদেশি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশানের সাথে একত্রে কাজ করে যাবে।
এবারের মেলায় বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহি ও মুখরোচক খাবারের পাশাপাশি ছিল বাংলাদেশি কাপড়ের স্টল। শাহী মোরগ-পোলাও, নিহারি-পরোটা, কাচ্চি বিরিয়ানী, ঘরে তৈরি মিষ্টি চমচম ও কালোজাম, সিঙ্গারা ও হালিম ছিল অন্যতম। সাংস্কৃতিক অংশ হিসেবে দলীয় সঙ্গীত, দেশাত্মবোধক গান, লোকগীতি ও দলীয় নাচ পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয় ব্যান্ড সংগীতের জনপ্রিয় গান পরিবেশনের মাধ্যমে।এই মেলার অন্যতম আয়োজক, স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের জন-সংযোগ সম্পাদক ঐশিক রহমান বলেন,
Source: Kawsar Ahmed
“গত বছরও আমরা ছোট পরিসরে মেলার আয়োজন করেছিলাম। তবে, এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর কারণে অনেকেই শঙ্কিত ছিলেন মেলা হবে কিনা, হলেও কী রকম হবে ইত্যাদি নিয়ে। সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমি মনে করি সব মিলিয়ে এবারের মেলা অনেক সুন্দর হয়েছে।”
পেশায় চার্লস ডারউইন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ঐশিক রহমান এবারের মেলার আয়োজন সম্পর্কে আরও বলেন,
“মেলার আয়োজন করাটা অনেক শ্রম ও সময় সাপেক্ষ বিষয়। এবারের মেলার জন্য আমাদের অনেকেই নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তাদের মধ্য থেকে আমি বিশেষভাবে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহমুদুল হাসান, সহসভাপতি মোহাম্মদ সালমান ওয়াহিদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাকিব ওশিন, অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ড. সামি আজম, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান আহমেদ সজিব-সহ কমিটির সব সদস্য, স্বেচ্ছাসেবকদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
এই মেলা কি এখন থেকে প্রতিবছরই অনুষ্ঠিত হবে কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইলে ঐশিক রহমান বলেন,
“আগামী বছর বাংলা নববর্ষের ঠিক পরেই এই মেলা আরও বড় পরিসরে আয়োজন করার আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।”নর্দান টেরিটোরিতে কয়েক মাস যাবত কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ শূন্য থাকার পরও সরকারের নিয়ম অনুযায়ী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে মেলার আয়োজনে করা হয়েছে বলে জানান ঐশিক। তিনি বলেন, প্রতিটি স্টলে এবং মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্থানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মেলায় ভিন্ন প্রবেশ এবং প্রস্থানের পথ ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
Source: Kawsar Ahmed
ঐশিক আরও বলেন, ৬ ঘণ্টাব্যাপি মেলা চলার কারণে প্রায় ২০০ জনেরও বেশি লোক বিভিন্ন সময়ে মেলায় আসতে পেরেছেন; এতে করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে।
নর্দার্ন টেরিটোরিতে জনসমাগম বিষয়ক কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে, জনগণকে ১.৫ মিটার জন-দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে।