গ্যালিলি বেসিনে আদানি কয়লা খনি প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় দুটি প্লান অনুমোদনের জন্য সময়সীমা বেধে দেয়া হয়েছে। কুইন্সল্যান্ডের প্রিমিয়ার আনাস্তাসিয়া পালুশেই অনিশ্চিত হয়ে পড়া এই প্রকল্পের জন্য এমন পদক্ষেপকে বড় অগ্রগতি বলে মনে করেন। এতে করে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জানা যাবে ভারতীয় কোম্পানি আদানি তাদের কয়লা খনি প্রকল্পটি নিয়ে এগুতে পারবে কিনা।
প্রিমিয়ার আনাস্তাসিয়া পালুশেই আদানির দেয়া দুটি পরিবেশ বিষয়ক প্লান এবং পরিবেশ দপ্তরের অনুমোদনের জন্য পর্যালোচনার সময়সীমা আগামী মধ্য জুনে সম্পন্ন হবে বলে ঘোষণা করেন। আগামী ৩১শে মের মধ্যে বিরল প্রজাতির ফিঞ্ছ পাখি রক্ষা প্রকল্প নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এদিকে আদানির ভূগর্ভস্থ জল ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে আগামী ১৩ই জুনের মধ্যে। আদানির সাথে কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের পরিবেশ দপ্তরের আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত আসে।
সম্প্রতি কুইন্সল্যান্ডে লেবার দলের পরাজয়ের ফলে প্রিমিয়ার এ বিষয়ে উদ্যোগী হন। আদানি অস্ট্রেলিয়ার প্রধান লুকাস ডাও দীর্ঘদিন অচলাবস্থার পর এমন অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে এবং পরিবেশ এবং বিজ্ঞান দপ্তর এ বিষয়ে তাদের স্বাধীন সিদ্ধান্ত জানাবেন। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, ভারতের সাথে ব্যবসা চলমান রাখতে এটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি বলেন, ভারতের পুনঃনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে তার কথা হয়েছে এবং তিনি দ্বিপাক্ষিক ব্যবসায়িক সম্পর্ক টিকে থাকবে বলে আশ্বাস দেন।
এদিকে আইনজীবীরা জানান যদি আদানি প্রকল্প না এগোয় তবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী আদানি কুইন্সল্যান্ড সরকারের কাছে বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি করবে।
ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথ ওয়েলসের সিনিয়র লেকচারার জনাথন বনিচা বলেন, এই প্রকল্প অনুমোদন না পেলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে এমন বার্তা যাবে যে এ রাজ্য বিনিয়োগের জন্য অনিরাপদ এবং অস্বাগতিক।
এদিকে কন্সট্রাকসন, ফরেসট্রি, মেরিটাইম, মাইনিং এন্ড এনার্জি ইউনিয়ন বলেছে যে এ প্রকল্পে মাইন অটোমেশন প্রয়োগ এবং ভারত থেকে কর্মী নিয়ে আসা হবে উদ্বেগজনক। মিস পালুশেই এ প্রসঙ্গে বলেন, কুইন্সল্যান্ডবাসির কর্মসংস্থান বিষয়ে আদানিকে পরিষ্কার ধারনা দিতে হবে।
আদানি অস্ট্রেলিয়ার সিইও লুকাস ডাও ইউনিয়নের উদ্বেগকে নাকচ করে দিয়ে বলেন, এ প্রকল্পে কোন অটোমেশন প্রয়োগ করা হবে না এবং লোক আনতে ৪৫৭ ভিসাও ব্যবহার করা হবে না। কাজ কুইন্সল্যান্ডের মানুষেরাই পাবে।
এই সপ্তাহেই একটি চাইনিজ কোম্পানি আদানির পাশেই একটি বড় কয়লা প্রকল্পের জন্য প্রস্তাব করবে। অস্ট্রেলিয়া ইন্সটিটিউটের রিচার্ড ডেনিশ বলেন, অনেক কোম্পানিই কয়লার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার কথা নতুন করে ভাবছে।
আদানিকে এই প্রকল্প এগিয়ে নিতে ফেডারেল অনুমোদন, বেশ কিছু আইনগত চ্যালেঞ্জ এবং আদিবাসীদের ভূমি বিষয়ক বিতর্কের মত আরও কিছু ইস্যু মোকাবেলা করতে হবে।